আবারও ট্রলারসহ ১০ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা শেষে ফেরার পথে কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলীয় জলসীমা থেকে একটি ট্রলারসহ আরও ১০ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ পৌরসভাস্থ কায়ুকখালী ঘাট বোট মালিক সমিতির সভাপতি সাজেদ আহমেদ।
তিনি বলেন, মাছ ধরা শেষে ফেরার পথে সেন্টমার্টিনের কাছাকাছি এলাকায় ট্রলারসহ আরও ১০ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। কয়েক দিন আগে আরেকটি ট্রলারসহ ছয় জেলেকে ধরে নিয়ে যায় তারা। এসব ঘটনায় উপকূলজুড়ে জেলেদের ভয়–আতঙ্ক বাড়ছে।
ধরে নিয়ে যাওয়া ট্রলারের মালিক মো. আমিনের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, ট্রলারটি গেল সোমবার ঘাট ছেড়ে সাগরে যায়। ফেরার পথে আরাকান আর্মির সদস্যরা সেটি আটকে জেলেদের তুলে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ট্রলারসহ ১০ জেলে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা স্থানীয়দের কাছ থেকে জেনেছি। বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল আরাকান নেটওয়ার্ক জানায়, গেল ২৮ অক্টোবর থেকে আরাকান আর্মির উপকূলীয় নিরাপত্তা ইউনিট সমুদ্র টহল জোরদার করে। টহলের সময় আরাকান রাজ্যের জলসীমা অতিক্রম করে মাছ ধরতে থাকা কয়েকটি বাংলাদেশি ট্রলারকে শনাক্ত করা হয়।
সংবাদমাধ্যমটির তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ১৮৮ বাংলাদেশি জেলে ও ৩০টি নৌকা আটক করার পর পরবর্তীতে মুক্তি দেওয়া হয়। তাদের দাবি—‘আইন অমান্য করায়’ সাম্প্রতিক সময়ে আবারও বাংলাদেশি ট্রলার ধরা হচ্ছে।
তবে বিজিবির তথ্য অনুযায়ী, গেল ১১ মাসে বাংলাদেশ–মিয়ানমার সীমান্তে নাফ নদ ও আশপাশের জলসীমা থেকে অন্তত ৩৫০ জেলেকে অপহরণ করে আরাকান আর্মি। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সহায়তায় কয়েক দফায় প্রায় ২০০ জেলেকে ফেরত আনা হলেও এখনো প্রায় ১৫০ জেলে তাদের হাতে রয়েছে। এতে করে অনেক জেলে এখন সাগরে মাছ ধরতে যেতে ভয় পাচ্ছেন।