রাজনীতি

বিবাহবার্ষিকীর দিনেই শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়

ছবি: সংগৃহীত

আজ ১৭ নভেম্বর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৫৮তম বিবাহ বার্ষিকী। ১৯৬৭ সালে এই দিনে তিনি বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ আলী মিয়ার (সুধা মিয়া) সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু এই বিশেষ দিনেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে এসেছে তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায়। বিষটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সরব আলোচনা চলছে। বিবাহবার্ষিকীর দিনে সাজা হওয়ার বিষয়টি নিয়ে একেকজন একেক ধরনের মন্তব্য করছেন। কেউ কেউ বলছেন ঘটনাটি কাকতালীয়।

১৯৬৭ সালের এই দিনে শেখ মুজিবের কারাবন্দি অবস্থায় ফজিলাতুন নেছার তত্ত্বাবধানে শেখ হাসিনা বিয়ে করেন বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়াকে। তাদের সংসারে দুটি সন্তান—সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায় দিয়েছেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-১, অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ ছিল—উসকানিমূলক বক্তব্য, ছাত্র–জনতাকে নির্মূলের নির্দেশ, রংপুরে আবু সাঈদকে হত্যা, ঢাকায় ছয় আন্দোলনকারীকে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা। রায়ে দুটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড, একটি অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড, এবং রাজসাক্ষী হিসেবে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের সাজা প্রদান করা হয়। এছাড়া, শেখ হাসিনা ও কামালের সমস্ত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি জব্দের আদেশ দেয়া হয়েছে।

রায় পাঠ শুরু হয় দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে এবং শেষ হয় ২টা ৫০ মিনিটে। রাষ্ট্রপক্ষ মামলার সমস্ত প্রক্রিয়া শেষে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছিল। অপরদিকে, রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীরা তাদের খালাস চেয়েছিলেন। ট্রাইব্যুনাল উল্লেখ করেছেন, শেখ হাসিনা ও অন্যান্য আসামির অপরাধ প্রমাণিত। তবে রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ক্ষমা চাওয়ায় তার সাজা ৫ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।

এজলাস থেকে রায় সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)-তে। এই বিশেষ দিনে রায়ের কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে এটিকে কাকতালীয় ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করছেন, কেউ কেউ এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করছেন।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক জীবনে পাঁচবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন—১৯৯৬–২০০১, ২০০৯–২০১৪, ২০১৪–২০১৯, ২০১৯–২০২৪ এবং ২০২৪ সালে। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার উত্তাল আন্দোলনের মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।

 

এসি//

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন