উত্তরে লেগেছে শীতের প্রথম আলতো ছোঁয়া
মলিন বিকেলের আলো ধীরে ধীরে নরম হচ্ছে, বাতাসে জমছে এক অদ্ভুত স্নিগ্ধতা। মাঠের ধান পেকে সোনালি হয়েছে, গ্রামের পথঘাটে ভেসে বেড়াচ্ছে নতুন ধানের গন্ধ। এমন সময়েই উত্তর দিগন্তে শোনা যাচ্ছে এক পরিচিত ডাক- শীত আসছে!
বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) জানিয়েছে, আগামী ১০ নভেম্বর থেকে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে শীতের আগমন ঘটতে পারে। তবে সারাদেশে শীতের পূর্ণ আমেজ পেতে অপেক্ষা করতে হবে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত। প্রতিষ্ঠানটির পূর্বাভাস অনুযায়ী, প্রথম শৈত্যপ্রবাহ ডিসেম্বরে দেখা দিতে পারে।
বিডব্লিউওটির তথ্য অনুযায়ী, লঘুচাপের প্রভাব কমে যাওয়ায় দেশের বেশিরভাগ এলাকা থেকে বৃষ্টিপাত ইতিমধ্যে কমতে শুরু করেছে। আগামী ৭ নভেম্বর পর্যন্ত কিছু কিছু স্থানে সামান্য বৃষ্টি হতে পারে, তবে এরপর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকবে বেশ স্থিতিশীল ও অনুকূল।
এই সময়টিকে কৃষক সমাজ দেখছে আশীর্বাদ হিসেবে। ধান কাটার মৌসুমে এমন স্বস্তির আবহাওয়া তাদের মুখে এনেছে হাসি।
সংস্থাটি জানায়, ৮ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত সময়টি কৃষিকাজের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এই সময়ে ধান কাটা ছাড়াও শীতকালীন সবজি—মুলা, বাঁধাকপি, ফুলকপি কিংবা শাকপাতা—সব কিছুর চাষ শুরু করা যাবে নির্বিঘ্নে।
তবে একটুখানি ব্যতিক্রম থাকছে দক্ষিণ-পূর্বে। ১৭ থেকে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু এলাকায় সামান্য বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছে বিডব্লিউওটি।
অন্যদিকে, ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আশার খবর দিয়েছে সংস্থাটি। ২০ নভেম্বরের আগে সাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরির সম্ভাবনা খুবই কম। তবে নভেম্বরের শেষ থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সাগরে আবার ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ তৈরি হতে পারে। সেই সময়েই দেশে একবার বৃষ্টির বলয় আসার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না তারা।
সব মিলিয়ে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই দেশের আবহাওয়ায় আসছে এক নতুন অধ্যায়—
ধানের খড়ের গন্ধ, শীতল বাতাসের ছোঁয়া আর সকালের কুয়াশায় ভেজা গ্রামবাংলা। প্রকৃতি যেন প্রস্তুত, ঋতুর নতুন পালাবদলের মঞ্চে।
এসি//