যেভাবে বাড়াবেন মোটরসাইকেলের মাইলেজ
জ্বালানির দাম বাড়ায় এখন অনেক বাইকচালকই ভাবছেন— কীভাবে মাইলেজ একটু বাড়ানো যায়? আসলে কিছু সহজ অভ্যাস গড়ে তুললে প্রতি লিটারে কয়েক কিলোমিটার বেশি রাইড পাওয়া সম্ভব। নিচে দেওয়া হলো এমন কিছু কার্যকর পরামর্শ, যা নিয়মিত মানলে জ্বালানি বাঁচবে, বাইকের আয়ু বাড়বে।
১. হঠাৎ গতি বাড়ানো এড়িয়ে চলুন
দ্রুত অ্যাকসেলেট করলে ইঞ্জিনে অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং বেশি ফুয়েল খরচ হয়। ধীরে ধীরে স্পিড বাড়ান ও নির্দিষ্ট গতিতে চালান—এতে বাইক মসৃণভাবে চলে, ইঞ্জিনের আয়ু বাড়ে, আর মাইলেজও উন্নত হয়।
২. সঠিক গিয়ার ব্যবহার করুন
ভুল গিয়ারে বাইক চালালে ইঞ্জিন অপ্রয়োজনীয়ভাবে ঘুরতে থাকে, ফলে জ্বালানি খরচ বাড়ে। ইঞ্জিনের আরপিএম অনুযায়ী গিয়ার পরিবর্তন করলে চাপ কমে, পারফরম্যান্স বাড়ে এবং মাইলেজও ভালো পাওয়া যায়।
৩. নির্দিষ্ট স্পিড বজায় রাখুন
গতি বারবার বাড়ানো–কমানো মাইলেজের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর অভ্যাসগুলোর একটি। সাধারণত ৪০–৬০ কিমি/ঘণ্টা গতিতে বাইক চালালে ইঞ্জিন সবচেয়ে কার্যকরভাবে কাজ করে। স্থির স্পিড বজায় রাখলে জ্বালানি সাশ্রয় হয় ও রাইডও হয় আরামদায়ক।
৪. টায়ারের প্রেশার ঠিক রাখুন
টায়ারে প্রেশার কম থাকলে ইঞ্জিনকে বেশি পরিশ্রম করতে হয়, যার ফলে ফুয়েল খরচ বেড়ে যায়। প্রতি সপ্তাহে একবার হলেও টায়ারের PSI মেপে নিশ্চিত করুন যে সেটি নির্মাতার নির্দেশনা অনুযায়ী আছে। সঠিক টায়ার প্রেশার মানেই ভালো মাইলেজ ও নিরাপদ রাইড।
৫. বাড়তি ওজন কমান
অপ্রয়োজনীয় ওজন বাইকের পারফরম্যান্সে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ভারী লাগেজ, বাড়তি যাত্রী বা অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বহন করলে ইঞ্জিনে বাড়তি চাপ পড়ে এবং ফুয়েল কনজাম্পশন বেড়ে যায়। তাই বাইক যতটা সম্ভব হালকা রাখুন।
৬. নিয়মিত সার্ভিসিং করুন
নিয়মিত সার্ভিসিং বাইকের ‘হার্ট চেকআপ’-এর মতোই জরুরি। সময়মতো ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন, এয়ার ফিল্টার ও স্পার্ক প্লাগ পরিষ্কার, চেইন ও ব্রেক অ্যাডজাস্ট রাখা—এসবই ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখে এবং জ্বালানি সাশ্রয় করে।
৭. মানসম্মত ফুয়েল ব্যবহার করুন
নিম্নমানের পেট্রল কেবল মাইলেজ কমায় না, ইঞ্জিনেরও স্থায়ী ক্ষতি করে। সবসময় ভালো মানের ও সঠিক পরিমাণে ফুয়েল নিন। এতে ইঞ্জিন পরিষ্কার থাকে, জ্বালানি দক্ষতা বাড়ে এবং বাইক দীর্ঘদিন ভালো পারফরম্যান্স দেয়।
বাইকের মাইলেজ বাড়ানো কোনো একদিনের কাজ নয়— এটি নিয়মিত যত্ন, সচেতনতা ও সঠিক অভ্যাসের ফল। একটু যত্ন নিলেই জ্বালানি বাঁচবে, বাইকের পারফরম্যান্সও থাকবে দীর্ঘস্থায়ী।