দেশজুড়ে

সমুদ্র সৈকতে বাড়ছে অবৈধ স্থাপনা, নীরব ভূমিকায় প্রশাসন!

কক্সবাজারের সুগন্ধা পয়েন্টে প্রতিদিনই বেড়ে চলছে দখলদারদের দাপট। প্রাকৃতিক বালিয়াড়ি কেটে মাটি ভরাট করে নির্মিত হচ্ছে অস্থায়ী দোকানপাট, ছাউনি ও কাঠের স্থাপনা। একসময় যেখানে হালকা হাওয়ায় বালির ঢেউ খেলত, এখন সেখানে ছড়িয়ে আছে টিনের ঘর ও পলিথিনের ছাউনি।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, অন্তত কয়েকটি নতুন স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রতিদিনই কেউ না কেউ নতুন জায়গা দখল করছে। কেউ চা-স্টল গড়ছে, কেউ ভবিষ্যতের স্থায়ী দোকানের জন্য জায়গা চিহ্নিত করছে।

দেশের আইন অনুযায়ী সমুদ্র সৈকত ও বালিয়াড়ি এলাকায় স্থাপনা নির্মাণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত) এই অঞ্চলকে ‘সংরক্ষিত এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। তবে বাস্তবে তদারকি বা প্রশাসনিক কার্যক্রম প্রায় নেই। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, বারবার অভিযান চালানো হলেও দখল ফিরে আসে।

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক সোহেল আহমেদ বলেন, “প্রতিবার আসলে দেখি সৈকতের চেহারা বদলে যাচ্ছে। বালিয়াড়ি নষ্ট হলে কক্সবাজারের সৌন্দর্যই হারিয়ে যাবে।”

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, দখলদারদের উচ্ছেদে অভিযান পরিকল্পনা করা হচ্ছে। একাধিক সংস্থা সমন্বয় করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে স্থানীয়রা প্রশ্ন করেন—প্রতিবার অভিযান হলেও কিছুদিনের মধ্যে দখল আবার ফিরে আসে। স্থায়ী সমাধান কোথায়?

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন, বালিয়াড়ি শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অংশ নয়, এটি উপকূলকে প্রাকৃতিক ঢাল হিসেবে রক্ষা করে। সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস বা ঝড়ের সময় বালিয়াড়ি উপকূলের পেছনের এলাকা রক্ষা করে। বালিয়াড়ি ধ্বংস হলে উপকূলের ভারসাম্য নষ্ট হয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয় স্থানীয় জীববৈচিত্র্য, মাটি ও সামুদ্রিক পরিবেশ।

প্রাকৃতিক বালিয়াড়ি হারালে শুধু সৈকতের সৌন্দর্যই নয়, পরিবেশের ভারসাম্যও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কক্সবাজারের প্রাণ—এই সৈকত—এখন প্রতিদিনই ধীরে ধীরে দখলের নিচে হারিয়ে যাচ্ছে।

 

এমএ//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন