শ্বাশুড়িকে হত্যার দায়ে পুত্রবধূর মৃত্যুদণ্ড, পরকীয়া প্রেমিকের যাবজ্জীবন
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে শ্বাশুড়ি হত্যার দায়ে এক পুত্রবধূকে মৃত্যুদণ্ড ও তার পরকীয়া প্রেমিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আফরোজা খাতুন কামারখন্দ উপজেলার রসুলপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের স্ত্রী। অপর আসামি ডা. মো. লিয়াকত হোসেন, বেলকুচি উপজেলার সুবর্ণসাড়া গ্রামের ওসমান ডাক্তারের ছেলে।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে আফরোজাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত লিয়াকত হোসেনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) এডভোকেট হামিদুল ইসলাম দুলাল জানান, রায় ঘোষণার সময় আফরোজা খাতুন পলাতক ছিলেন। আদালত থেকে পরকীয়া প্রেমিক লিয়াকতকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, বেলকুচি উপজেলার জিধুরী গ্রামের শেখ সুলতানের সৎ পুত্রবধূ ছিলেন আফরোজা খাতুন। স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায়ই ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজের সুবাদে অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এ নিয়ে পরিবারের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
২০০৬ সালে স্বামী আব্দুল মালেক মারা গেলে আফরোজার আচরণ আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। পরে শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা তার ওপর সন্দেহ প্রকাশ করলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিশোধের সুযোগ খুঁজতে থাকেন।
২০১২ সালের ১৭ অক্টোবর বিকেলে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে এসে শ্বাশুড়ি রাবিয়া খাতুনকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন আফরোজা। এরপর থেকে দুজনের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরদিন বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে রাবিয়া খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহতের স্বামী শেখ সুলতান বাদী হয়ে বেলকুচি থানায় আফরোজা খাতুন, তার প্রেমিক লিয়াকত হোসেনসহ তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে আফরোজা খাতুনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১ জুলাই পুলিশ দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত আজ এই রায় ঘোষণা করেন।
এসএইচ//