জাতীয়

‘বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেখে ছুড়ে ফেলেছিলো ইসরাইলি বাহিনী’

ইসরাইলের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া বাংলাদেশের আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম দেশে ফিরেছেন। শনিবার (১১ অক্টোবর) ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে তিনি রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। এসময় পরিবারের সদস্য ও সহকর্মীরা ফুল দিয়ে তাকে স্বাগত জানান।

দেশে ফিরে শহিদুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসাই আমাকে ফিরে আসার সুযোগ করে দিয়েছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, গাজার মানুষ এখনো মুক্ত নয়, এখনো তারা নির্যাতনের শিকার। আমাদের কাজ এখানেই শেষ নয়।’

ইসরাইলিদের বর্বর আচরণের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে আটকের সময় বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেখে ইসরাইলি সেনা সদস্যরা বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। আমার পাসপোর্ট মাটিতে ছুড়ে ফেলে দেয়।‘

তিনি বলেন, ‘এমন ন্যাক্কারজনক কাজ আমাকে খুবই আঘাত করেছে। একটি দেশের পাসপোর্ট এমনভাবে ছুড়ে ফেলা অপরাধ, আর তারা এমন অপমান করে পার পেয়ে যাবে তা মেনে নেয়া যায় না।‘

দৃকের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক বার্তায় তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মতো আরও অনেক ফ্লোটিলা যেতে হবে, যত দিন না ফিলিস্তিন সম্পূর্ণ স্বাধীন হয়। ফিলিস্তিন মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে।’

শহিদুল আলমের প্রত্যাবর্তনে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন তার স্ত্রী ও মানবাধিকারকর্মী রেহনুমা আহমেদ, জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক তানজিম ইবনে ওয়াহাব, আলোকচিত্রী ও গবেষক মুনেম ওয়াসিফসহ অনেকে।

এর আগে শুক্রবার (১০ অক্টোবর) ইসরাইল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর শহিদুল আলম টার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পৌঁছান। সেখানে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান তাকে স্বাগত জানান।

দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও নাগরিক অধিকারকর্মী শহিদুল আলম গাজা অভিমুখী আন্তর্জাতিক নৌবহর ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা’তে যোগ দিয়েছিলেন। দখলদার ইসরাইলি বাহিনী গেল বুধবার ওই বহরে হামলা চালিয়ে সব অধিকারকর্মী ও নাবিককে আটক করে। পরে শহিদুল আলমকে কেৎজিয়েত কারাগারে নেওয়া হয়।

শহিদুল আলমের মুক্তি ও দেশে প্রত্যাবর্তনে সহযোগিতার জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

উল্লেখ্য, গাজার অবরোধ ভাঙা ও ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’ এবং ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা’ উদ্যোগের অধীনে ৯টি নৌযান নিয়ে এই বৈশ্বিক অভিযাত্রা শুরু হয়েছিল। 

 

এমএ//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন