দেশজুড়ে

রংপুরে অ্যানথ্রাক্সে শতাধিক গরুর মৃত্যু, আক্রান্ত অর্ধশত মানুষ

রংপুরে গেল দুই মাসে অ্যানথ্রাক্স রোগে শতাধিক গবাদিপশু মারা গেছে। আক্রান্ত হয়েছে আরও অর্ধশতাধিক মানুষ। অসচেতনভাবে অসুস্থ পশু জবাই ও মাংস বিক্রি করায় এ ব্যাধি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। রংপুর ছাড়াও মেহেরপুরসহ আরও কয়েক জেলায় অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়েছে।

রংপুর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এখন পর্যন্ত ১১ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্স নিশ্চিতভাবে শনাক্ত হয়েছে। জুলাই ও সেপ্টেম্বরে পীরগাছা উপজেলায় দুইজনের মৃত্যু হয়। একই সময় উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে আরও বহু মানুষের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ দেখা যায়।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, পীরগাছা, মিঠাপুকুর ও কাউনিয়া উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়েও বেশি। টিকার ঘাটতি ও অ্যান্টিবায়োটিকের সংকট থাকায় চিকিৎসায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।

মিঠাপুকুর উপজেলার ইমাদপুর ইউনিয়নের আমাইপুর গ্রামে এক অসুস্থ গরু জবাই করার পর পাঁচ-ছয় জনের শরীরে ঘা দেখা দেয়। পরীক্ষা করে এক জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এম এ হালিম লাবলু বলেন, ‘এই রোগ গরু থেকে মানুষে ছড়ায়, তবে মানুষ থেকে মানুষে নয়। তাই অসুস্থ গরু জবাই বা মাংস খাওয়া বিপজ্জনক।’

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন, শুধু পীরগাছাতেই দেড় লাখের বেশি গবাদিপশু ঝুঁকিতে রয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজারের বেশি পশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে, তবে আরও ৫০ হাজার টিকার প্রয়োজন।

রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. শাহিন সুলতানা জানান, আক্রান্ত তিন উপজেলায় তিনটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। সবাইকে অসুস্থ গরু জবাই না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবু ছাইদ বলেন, ‘অ্যানথ্রাক্স শনাক্তের পর থেকেই টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে রোগ ঠেকাতে সবচেয়ে জরুরি হলো মানুষকে সচেতন করা।’

 

চিকিৎসকরা বলছেন, অ্যানথ্রাক্স এখন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও অসচেতনতা বাড়লে পরিস্থিতি আবারও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।

 

এমএ//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন