জাপানে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন সানায়ে তাকাইচি
জাপানের ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) তাদের নতুন নেতা হিসেবে সানায়ে তাকাইচিকে নির্বাচিত করেছে। ৬৪ বছর বয়সি এই রাজনীতিক দেশটির ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শনিবার (০৪ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
তাকাইচি জাপানের রাজনীতিতে এক পরিচিত ও বিতর্কিত মুখ। তিনি এর আগে সরকারি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং রাজনীতির বাইরে টেলিভিশন উপস্থাপক ও হেভি মেটাল ব্যান্ডের ড্রামার হিসেবেও কাজ করেছেন। অভিজ্ঞতা ও প্রশাসনিক দক্ষতার কারণে তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বে জায়গা করে নিলেও তার রাজনৈতিক অবস্থান অনেকটা ডানপন্থি হিসেবে পরিচিত।
তবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে হলে তাকাইচিকে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। জাপানের অর্থনীতি বর্তমানে মন্থর, মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে এবং নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো ক্রমবর্ধমান চাপে রয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র–জাপান সম্পর্কের জটিলতা, আগের সরকারের সময় ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত শুল্ক চুক্তি বাস্তবায়ন এবং দলীয় অস্থিরতা সামলানোও তার বড় পরীক্ষা হবে।
গেল মাসে ধারাবাহিক নির্বাচনি পরাজয়ের পর প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা পদত্যাগ করেন। এর ফলে ক্ষমতাসীন এলডিপি সংসদের দুই কক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে দুর্বল অবস্থায় পড়ে। এই পরিস্থিতিতে দলের ঐক্য ফিরিয়ে আনা তাকাইচির জন্য অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
টোকিওর টেম্পল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জেফ কিংস্টন বিবিসিকে বলেন, “তাকাইচির জন্য দলের অভ্যন্তরীণ বিভাজন নিরসন করা সহজ হবে না। তিনি এলডিপির কঠোরপন্থী অংশের প্রতিনিধি, যারা মনে করে দলের জনপ্রিয়তা হ্রাসের কারণ হলো তাদের মূল ডানপন্থি নীতিমালা থেকে বিচ্যুতি।”
প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে তাকাইচি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি 'আবেনোমিক্স' অর্থনৈতিক নীতি পুনর্বহাল করবেন। পাশাপাশি তিনি নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতিতে কঠোর অবস্থান গ্রহণ এবং জাপানের শান্তিবাদী সংবিধান সংশোধনের পক্ষপাতী।
প্রসঙ্গত, জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘসময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা শিনজো আবে যে সব অর্থনৈতিক সংস্কার ঘটিয়েছিল, সেগুলোকেই 'আবেনোমিক্স' বা 'আবেতত্ত্ব' বলা হয়।
এমএ//