গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৬৪ হাজার
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের চলমান আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬৪ হাজার ৩০০ ফিলিস্তিনি। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। একই সঙ্গে তিনজন ফিলিস্তিনি অনাহারে মৃত্যুবরণ করেছেন বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। খবর আনাদোলু।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, গেল ২৪ ঘণ্টায় গাজার বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে ৬৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময়ে আহত হয়েছেন ৪২২ জন। ফলে মোট আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬২ হাজার ৫ জনে। এখনও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপে আটকে আছেন, যাদের কাছে পৌঁছাতে উদ্ধারকর্মীরা হিমশিম খাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, মানবিক সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে গেল একদিনে ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে ছয়জন নিহত ও আরও ১৯০ জন আহত হয়েছেন। চলমান সংঘাত শুরুর পর থেকে এ ধরনের ঘটনায় মোট ২ হাজার ৩৬২ জন নিহত ও ১৭ হাজার ৪৩৪ জন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে শুধু ক্ষুধা ও অপুষ্টিজনিত কারণে গেল ২৪ ঘণ্টায় আরও তিনজন মারা গেছেন। গেল বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত অনাহারজনিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭৬ জনে, যাদের মধ্যে ১৩৪ জন শিশু।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, গেল ২ মার্চ থেকে ইসরাইল গাজার সব সীমান্ত ক্রসিং পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে ২৪ লাখ মানুষের এ অঞ্চল ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে। জাতিসংঘ-সমর্থিত খাদ্য নিরাপত্তা জরিপ ইতোমধ্যেই উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত করেছে এবং চলতি মাসেই তা দক্ষিণাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে।
সাময়িক যুদ্ধবিরতির বানচাল করে চলতি বছরের ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ফের হামলা শুরু করে ইসরাইল। তখন থেকে অন্তত ১১ হাজার ৭৬৮ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। এতে জানুয়ারির যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যত ভেঙে যায়।
এর আগে, গত নভেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একই সঙ্গে গণহত্যার অভিযোগে ইসরাইল বর্তমানে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে বিচারের মুখোমুখি।
এমএ//