রায়হান হত্যা মামলার প্রধান আসামি জামিনে মুক্ত
সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত রায়হান হত্যা মামলার প্রধান আসামি বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া হাইকোর্ট থেকে জামিনে কারাগার থেকে বের হয়েছেন। আলোচিত এ হত্যা মামলার প্রধান আসামীর জামিনে মুক্তি পাওয়ার ঘটনায় নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে রায়হানের মা সালমা বেগম।
রোববার (১০ আগস্ট) বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ হাইকোর্ট থেকে প্রাপ্ত জামিনের নথি জমা দিয়ে তিনি মুক্ত হন। সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বনিক গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে মামলার প্রধান আসামিসহ ৪ জনের জামিনের খবরে ভেঙে পড়েছেন রায়হান আহমেদের মা সালমা বেগম। কাঁদতে কাঁদতেই তিনি বলেন, ‘আমি ব্যর্থ মা। কিছু করতে পারলাম না। অথচ ছেলে খুনের সুষ্ঠু একটি বিচারের অপেক্ষায় ছিলাম।’
আসামিরা জামিনে বের হয়ে পালিয়ে যাবে আশঙ্কা করে সালমা বলেন, ‘শুনলাম প্রধান আসামি মুক্তি পেয়েছে। নিজেকে নিরাপাত্তাহীন মনে হচ্ছে। আমার মতো অনেক মা আছেন; যারা হয়তো এমন বিচারের অপেক্ষা করছেন।’
সিলেট নগরীর আখালিয়ার নিহারিপাড়ার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে (৩৪) ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর রাতে কাষ্টঘর এলাকা থেকে ধরে নিয়ে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নিয়ে যায় পুলিশ। ফাঁড়িতে আটকে তাঁর উপর চালানো হয় নির্যাতন। পরদিন সকালে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রায়হান মারা যান।
প্রথমে পুলিশ দাবি করে, ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে রায়হান মারা গেছেন। কিন্তু তাঁর পরিবারের অভিযোগে প্রেক্ষিতে, তদন্তে মূল ঘটনা বেরিয়ে আসে। রায়হানের মৃত্যু নিয়ে সে সময় দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে তাঁর স্ত্রী তাহিমনা আক্তার তান্নি কোতোয়ালী থানায় মামলা করেন।
২০২১ সালের ৫ মে পিবিআই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে। প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে আনা হয়েছে এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে। মামলায় সহ অভিযুক্ত আছেন সহকারী উপপরিদর্শক আশেক এলাহী, কনস্টেবল মো. হারুন অর রশিদ, টিটু চন্দ্র দাস, সাময়িক বরখাস্ত এসআই মো. হাসান উদ্দিন এবং আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জের সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান।
আলোচিত এ মামলায় আকবরসহ চার্জশিটভুক্ত ৬ আসামির মধ্যে চার জনই এখন জামিনে মুক্ত। অপর দুই আসামির মধ্যে এএসআই আশেক এলাহী কারাগারে ও সংবাদকর্মী আব্দুল্লাহ আল নোমান ফ্রান্সে পলাতক রয়েছেন।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের সেরেস্তাদার কৃপা সিন্দু জানিয়েছেন, জামিন পাওয়া আসামিদের মধ্যে এসআই হাসান আলী পলাতক রয়েছেন। তিনি ২০২২ সালের জানুয়ারিতে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন।
আই/এ