ব্যাগে আট টুকরো লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন
গাজীপুরের টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায় পরিত্যক্ত ট্রাভেল ব্যাগ থেকে পলিথিনে মোড়ানো অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাব। নিহত লাশটি পরিবহন শ্রমিক অলি মিয়ার (৩৫)। স্ত্রীকে নিয়ে বাজে মন্তব্য এবং লোকজন দিয়ে মারধর করার ক্ষোভে এ হত্যাকাণ্ড ঘটনা হয় বলে র্যাব জানিয়েছে।
রোববার (১০ আগস্ট) দুপুর ১২টায় র্যাব-১-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সালমান নূর আলম সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আপেল মাহমুদ ও সাজ্জাদ হোসেন রনি শ্বাসরোধে অলি মিয়াকে হত্যা করে। পরে লাশ আট টুকরো করে পলিথিনে মুড়িয়ে ট্রাভেল ব্যাগে ভরে টঙ্গীর স্টেশন রোডে ফেলে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বিকার করেছে।
এ র্যাব কর্মকর্তা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আপেল মাহমুদ জানিয়েছে, তার স্ত্রীর চরিত্র সম্পর্কে খারাপ কথা বলা, আপেলের ভাগনেকে খুন করার পরিকল্পনা জেনে যাওয়া এবং অলি মিয়া এবং সাজ্জাদ হোসেন রনিকে কয়েক বছর আগে লোকজন দিয়ে মারধর করা- এই তিনটি কারণে অলিকে হত্যা করা হয়।
সালমান নূর আলম বলেন, ‘আপেল ও রনি আগে একাধিকবার অলি মিয়াকে ট্রেনের নিচে চাপা দিয়ে হত্যার জন্য রেললাইনে নিয়ে যায়। এমনকি হত্যাকাণ্ডের দিন ৬ আগস্ট সকালের দিকে অলিকে হত্যার জন্য আপেল ও রনি রেললাইনে নিয়ে যায়। কিন্তু ওই সময় ট্রেন না আসায় অলি, আপেল, রনি আবার আপেলের বাসায় চলে আসে’।
তিনি আরও বলেন, ‘পরে একই দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা তিন জন একসঙ্গে সকালের নাশতা করে এবং নাশতার পরে আসামি আপেলের স্ত্রী রান্নাঘরে থাকা অবস্থায় আপেল ও রনি পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের রুমের দরজা বন্ধ করে অলিকে বিছানায় ফেলে দড়ি ও বেল্ট দিয়ে পা বেঁধে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে তারা লাশ বাড়ির টয়লেটের ভেতর রেখে দেয়। সন্ধ্যায় বাজার থেকে ছুরি ও কালো ব্যাগ নিয়ে আসে। রাত ১২টার দিকে আট টুকরো করে পলিথিনের ভেতরে মুড়িয়ে টয়লেটের সানসেটে লুকিয়ে রাখে। পুরো ঘটনাটি শাওন বারান্দায় বসে পাহারা দেয়। পরে লাশ পচে গন্ধ ছড়ালে ৮ আগস্ট ভোরে ট্রাভেল ব্যাগে করে অটোরিকশাযোগে টঙ্গী স্টেশন রোডে ফেলে রেখে যায় তারা।’
এ ঘটনায় আপেল মাহমুদ সাদেক (৪২), তার স্ত্রী শাওন বেগম (৩২) ও সাজ্জাদ হোসেন রনিকে গত শনিবার রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর গ্রামে (২৫) গ্রেপ্তার করে র্যাব।
আই/এ