ইরানের সঙ্গে ব্যবসার অভিযোগ
ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
ইরান থেকে পেট্রোলিয়াম কেনাবেচায় জড়িত থাকার দায়ে ভারতীয় ৬ কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
এনডিটিভি জানায়, এই নিষেধাজ্ঞার কারনে যুক্তরাষ্ট্রে বা মার্কিন নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণাধীন যেকোনো স্থানে এসব কোম্পানির সম্পদ ও স্বার্থ ‘ব্লক’ বা জব্দ থাকবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জানিয়েছে, ইরান সরকার এই আয়ের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত উসকে দিচ্ছে। সন্ত্রাসবাদে অর্থ যোগান দিচ্ছে। নিজ দেশের জনগণকে দমন করছে। এসব কারনে মার্কিন নির্বাহী আদেশ ১৩৮৪৬ অনুযায়ী এসব লেনদেন নিষিদ্ধ।
স্থানীয় সময় বুধবার (৩০ জুলাই) বিবৃতি দিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ইরানি শাসকগোষ্ঠী মধ্যপ্রাচ্যে সহিংসতা উসকে দিতে তাদের তেল বিক্রির আয় থেকে রাজস্ব ব্যবহার করছে। এসব অর্থ ইরান সরকার বিদেশে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন এবং দেশের জনগণের ওপর দমন-পীড়নে ব্যবহার করে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তারা সেই অর্থপ্রবাহ বন্ধের চেষ্টা করছেন।
নিষেধাজ্ঞার আরোপ করা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ভারতের কয়েকটি বড় পেট্রোকেমিক্যাল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও রয়েছে। এগুলোর নাম যথাক্রমে কাঞ্চন পলিমার্স, জুপিটার ডাই কেম, অ্যাল কেমিক্যাল সলিউশনস, গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যালস, রমনিকলাল এস গোসালিয়া অ্যান্ড কোম্পানি, পার্সিসটেন্ট পেট্রোকেম ।
এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় অভিযোগ উঠেছে অ্যালকেমিক্যাল সলিউশনস প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে। এই প্রতিষ্ঠানটি ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ৮ কোটি ৪০ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য আমদানির করেছে। আরেক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যালস লিমিটেড। এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে ৫ কোটি ১০ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল কিনেছে। এরমধ্যে বেশী ছিলো মিথানল।
একই সময়ে জুপিটার ডাই কেম প্রাইভেট লিমিটেড টলুইনসহ ৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারের বেশি দামে ইরানি পণ্য আমদানি করেছে।
মিথানল ও টলুইনসহ ২ কোটি ২০ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য আমদানী করেছে রমনিকলাল এস গোসালিয়া অ্যান্ড কোম্পানি।
২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে পার্সিসটেন্ট পেট্রোকেম প্রাইভেট লিমিটেড প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ ডলারের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য, বিশেষ করে মিথানল আমদানি করেছে।
১৩ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের ইরানি পলিথিন পণ্য কিনেছে কাঞ্চন পলিমার্স নামে কোম্পানি।
নিষেধাজ্ঞার কারনে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানের সম্পদ কিংবা যেসব সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে আছে, সেগুলো জব্দ করা হবে। পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও কোম্পানিগুলোর বাণিজ্যিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হবে।
প্রতিষ্ঠানগুলোর যেকোনো সহযোগী প্রতিষ্ঠান, যেগুলোর ৫০ শতাংশ মালিকানা তাদের হাতে, সেগুলোও নিষিদ্ধ বলে বিবেচিত হবে।