চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম লাবিবা লামিয়া তানহা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। সকালে তাঁকে নিজ কক্ষে ওড়নার সঙ্গে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেখতে পান মা–বাবা।
সোমবার (২৮ জুলাই) সকালে ভাড়া বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের উল্টোদিকে সিয়াম প্যালেস নামে একটি ভবনে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন লাবিবা। তিনি মা-বাবার একমাত্র সন্তান। লাবিবা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের রাজনীতিতে সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি চবির ইয়ং ইকোনমিস্ট সোসাইটি এবং ক্যারিয়ার ক্লাবের সদস্য ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যু রহস্যজনক মনে করছেন সহপাঠীরা।
লাবিবার মুত্যৃর খবর শুনে ছুটে যান অর্থনীতি বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহী আমিন পূণ্য। তিনি বলেছেন, ফাঁস দেয়ার সময় লাবিবার উচ্চতা এমন ছিল, চাইলে সহজেই পা মাটিতে রাখতে পারত। তাদের গৃহকর্মীর কাছ থেকে তিনি শুনেছেন, দরজায় কেবল চাপ লক ছিল। ছিটকিনি ছিল না। জানালা খোলা ছিল। ঘটনাটি কীভাবে ঘটলো তিনি বুঝতে পারছেন না।
চবি ক্যারিয়ার ক্লাবের সভাপতি রাফসান হোসেন আলভী জানিয়েছেন, লাবিবার আচরণ ছিল স্বাভাবিক। তিনি বলেন, ‘রোববার রাতে ভার্চুয়াল সেশনে অংশ নেয় লাবিবা। বেশ কিছু প্রশ্নও করেছিলেন। রাত ১২টা ৪১ মিনিটে তিনি মেসেজ দেন পরীক্ষাজনিত কারণে আমি ৪ তারিখ আর ১৯ তারিখ বাদে সব সময় কাজ করতে পারবো।
লাবিবার সহপাঠী তনিমা বিনতে হোসাইন বলেছেন, ‘লাবিবা প্রথম বর্ষে ড্রপ খেয়ে নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছিলো। তবে অনেকদিন ধরেই বিষণ্নতায় ভুগছিল। সে সবার সঙ্গে তেমন মিশত না। তিনি ধারণা করছেন, হয়তো একাডেমিক চাপ থেকে কিছু ঘটতে পারে।’
সহকারী প্রক্টর কোরবান আলী বলেছেন, দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তারা ঘটনাস্থলে যান। তাদের সঙ্গে পুলিশ ও এক নারী চিকিৎসক ছিলেন। গিয়ে দেখেন মরদেহ আগে থেকেই নামানো। জানালার গ্রিলে ওড়না প্যাঁচানো কিন্ত কাটা অবস্থায়।
লাবিবার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, সকাল ৯টার দিকে ঘুম থেকে উঠে দরজা বাইরে থেকে লক দেখেন তাঁর মা ও বাবা। পরে তারা চাবি দিয়ে দরজা খুলে লাবিবাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।’
বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোস্তফা বলেন, তারা গিয়ে দেখেন জানালার গ্রিলের সঙ্গে ওড়না প্যাঁচানো। কিন্ত মরদহে মেঝেতে নামানো । মেয়েটির বাবা-মা জানান, সকালে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ ছিল। প্রাথমিকভাবে তারা ধারণা করছেন, এটি আত্মহত্যাজনিত ঘটনা। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই বিকেলে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।