আন্তর্জাতিক

গাজায় অনাহারে আরও ১৫ জনের মৃত্যু, রেহায় পায়নি শিশুরাও

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় খাদ্যাভাব ও অনাহারে মাত্র একদিনে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৫ জন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন মাত্র ছয় সপ্তাহ বয়সী এক নবজাতক শিশুও যিনি পর্যাপ্ত দুধের অভাবে মারা যান।

নিহত শিশুটির নাম ইউসুফ আবু জাহির। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময় ধরে বাজারে শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় দুধ অনুপলব্ধ। আর যেটুকু পাওয়া যাচ্ছে, তার দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। 

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।  

শিশুটির চাচা আদহাম আল-সাফাদি রয়টার্সকে বলেন, একটি ছোট দুধের কৌটার দাম ১০০ ডলার পর্যন্ত উঠে গেছে, যা আমরা কোনভাবেই কিনে উঠতে পারছি না।

মঙ্গলবার অনাহারে প্রাণ হারানো বাকি ব্যক্তিদের মধ্যেও তিনজন শিশু রয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের একজন, ১৩ বছর বয়সী আব্দুলহামিদ আল-ঘালবান, যিনি খান ইউনিস শহরের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ইসরাইলি সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে খাদ্য সংকট এবং অপুষ্টির কারণে এখন পর্যন্ত ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ৮০। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মৃত্যুর হার আরও বেড়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এদিকে মার্চ মাসে ইসরাইল কর্তৃপক্ষ গাজায় সব ধরনের পণ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যার ফলে খাদ্য মজুদ সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়ে যায়। পরবর্তীতে মে মাসে সীমিত সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হলেও, তা পৌঁছায়নি বেশিরভাগ মানুষের হাতে। এই সহায়তা সরবরাহের দায়িত্বে থাকা 'গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন' (জিএইচএফ) জাতিসংঘের কোনও তত্ত্বাবধানে কাজ করছে না, যার কারণে নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, সহায়তা কেন্দ্রে যাওয়ার পথে সহায়তার জন্য ভিড় করা মানুষদের লক্ষ্য করে হামলায় এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার বড় একটি অংশ মে মাসের পর থেকে ঘটেছে।

এ বিষয়ে ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি মন্তব্য করে বলেন, এই সহায়তা ব্যবস্থাপনা যেন একটি পরিকল্পিত মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে, যেখানে সাধারণ মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খাদ্যের জন্য দাঁড়াতে হচ্ছে।

অন্যদিকে, ইসরাইল দাবি করছে সহায়তা গুলো হামাস ছিনিয়ে নিচ্ছে। যদিও এর স্বপক্ষে তারা কোনও নির্ভরযোগ্য প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। জিএইচএফ নিজেও জতিসংঘের প্রতিবেদনগুলোকে "অতিরঞ্জিত ও বাস্তবতা-বিবর্জিত" বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

এসকে// 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন