অবরুদ্ধ গাজায় অনাহারে ৩৫ দিনের শিশুর মৃত্যু, নিহত আরও ১১৬
গাজা উপত্যকায় চলমান সংঘাত ও মানবিক সংকটের প্রতিনিয়ত আরও তীব্র হচ্ছে। অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে মাত্র ৩৫ দিন বয়সী এক নবজাতক অনাহারে মারা গেছে। ইসরাইলি অবরোধ ও মানবিক সহায়তা বন্ধ থাকায় এই শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে আলজাজিরা।
শনিবার (১৯ জুলাই) গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালে মারা যায় শিশুটি। হাসপাতালটির পরিচালক ডা. মুহাম্মদ আবু সালমিয়া জানিয়েছেন, খাবারের তীব্র ঘাটতির কারণে ওই শিশুসহ অন্তত আরও দুজন প্রাণ হারিয়েছেন। অপুষ্টি ও অনাহার গাজায় প্রতিনিয়ত মানুষের মৃত্যু ডেকে আনছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গাজার হাসপাতালগুলোয় প্রতিদিন হাজার হাজার ক্ষুধার্ত মানুষের ভিড় লেগে থাকে। সংকট এতটাই ভয়াবহ যে, অন্তত ১৭ হাজার শিশু বর্তমানে মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে।
একইদিন ইসরাইলি বাহিনীর চালানো হামলায় গাজা জুড়ে আরও ১১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৩৮ জন নিহত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ কেন্দ্রের সামনে গুলিতে। গাজার সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, এই হামলা হয়েছে দক্ষিণের খান ইউনিস ও রাফাহ এলাকায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে থাকা মানুষজনকে ইচ্ছাকৃতভাবে লক্ষ্য করে গুলি চালানো
গাজার এই ভয়াবহ অবস্থা নিয়ে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট ফেডারেশনের মহাসচিব জগন চাপাগাইন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘গাজায় দুর্ভিক্ষ এখন এক বাস্তব হুমকি। কাউকে যেন জীবন বাজি রেখে খাবার খুঁজতে না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।’
এই সংকটে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অপ্রাপ্যতা ও আকাশচুম্বী দামের কারণে ২৩ লাখ মানুষের প্রতিদিনের পুষ্টি চাহিদা মেটানো প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের প্রধান ইয়ান এগেল্যান্ড জানান, ‘গত ১৪২ দিনে আমরা গাজায় একটিও সাহায্যবাহী ট্রাক ঢোকাতে পারিনি। ইউরোপীয় নেতারা যেটা বলছেন, বাস্তবতা তার চেয়ে অনেক করুণ।’
এদিকে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, মিসর সীমান্তে তাদের হাতে গাজার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য মজুত রয়েছে, কিন্তু ইসরাইলি নিষেধাজ্ঞার কারণে সেগুলো পৌঁছাতে পারছে না। সংস্থাটির আহ্বান—’সীমান্ত খুলে দিন, অবরোধ তুলে নিন, আমাদের সাহায্য করতে দিন।’
এমএ//