চলছে কারফিউ, থমথমে গোপালগঞ্জ
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঘোষিত ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও নয়জন, আহত হয়েছেন ৫০ জনের বেশি। সহিংস পরিস্থিতির কারণে গতকাল বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জেলায় কারফিউ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
এর আগে বুধবার (১৬ জুলাই) সকালে ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ শিরোনামে একটি পদযাত্রার আয়োজন করে এনসিপি। তবে সকাল ৯টার পর থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
এনসিপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পদযাত্রা ও সমাবেশে বাধা দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায়।
সদর উপজেলার কংশুরে পুলিশের গাড়ি, ইউএনওর বহর, পৌর পার্কের সমাবেশস্থল, জেলা প্রশাসকের বাসভবন, এমনকি জেলা কারাগারের চারপাশে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
দুপুর ২টার কিছু পর এনসিপির শীর্ষ নেতারা সমাবেশস্থলে পৌঁছান। সমাবেশ শেষে ফেরার সময় তাদের ওপর আবার হামলা হয়। একপর্যায়ে তারা জেলা পুলিশের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী, র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়। সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান ব্যবহার করে সন্ধ্যায় এনসিপি নেতাদের গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় নেওয়া হয়।
এনসিপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, হামলাকারীরা বিভিন্ন মসজিদে ঢুকে মাইক ব্যবহার করে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। তারা স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের নির্লিপ্ত ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকার শাহবাগসহ রাজধানী ও বিভিন্ন জেলায় সড়ক অবরোধ করে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা এলাকাতেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।
ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে, রাতের পরিস্থিতি বিবেচনায় গোপালগঞ্জে অতিরিক্ত দেড় হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র। তবে শহরে প্রবেশের পথে গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করায় অনেক পুলিশ সদস্য ঢুকতে পারেননি বলে জানানো হয়।
এসি//