আন্তর্জাতিক

ফের বাজতে পারে যুদ্ধের দামামা: ট্রাম্প

তীব্র ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে আপাতত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। ফলে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে বিশ্ববাজারে। তবে এই স্বস্তি হয়তো বেশি দিন স্থায়ী হচ্ছে না। এমনটাই মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

বুধবার (২৫ জুন) ন্যাটো সম্মেলনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, উভয় দেশই দীর্ঘ ও তীব্র লড়াইয়ের পর এখন "ক্লান্ত" এবং "সন্তুষ্ট হয়ে ঘরে ফিরেছে"। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, এই সংঘাত ভবিষ্যতে আবারও শুরু হতে পারে।

ট্রাম্প দাবি করেন, ইরান ও ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে ‘কঠিন ও সহিংস’ লড়াই চালিয়ে গেছে, কিন্তু এখন উভয় পক্ষই ‘ক্লান্ত’ ও ‘সন্তুষ্ট’ হয়ে ঘরে ফিরেছে। 

তিনি বলেন, “আমরা মনে করি এটা শেষ। তারা আর একে অপরকে আক্রমণ করবে না।”

ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা এত দ্রুত ও শক্তিশালীভাবে আঘাত করেছি যে তারা পারমাণবিক উপকরণ সরানোর সুযোগই পায়নি। সবকিছু উড়ে গেছে—একেবারে ‘কিংডম কাম’-এ।

তিনি আরও জানান, ইসরায়েলি অ্যাটমিক এনার্জি কমিশনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন এই হামলা ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা বহু বছর পিছিয়ে দিয়েছে। 

ট্রাম্পের ভাষায়, “এই হামলা শুধু ইরানকেই বার্তা দেয়নি, গোটা বিশ্ব এখন জানে—আমেরিকার প্রতিরোধ ক্ষমতা এখনও অক্ষত, এবং ভয়ঙ্কর।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ইরানের সঙ্গে আলোচনার তারিখ ঠিক হয়েছে এবং একটি সম্ভাব্য চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তুতিও রয়েছে। তবে তিনি এই আলোচনাকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না।

স্পষ্ট ভাষায়  তিনি বলেন, “আমি চাইলে চুক্তি করব, না করলেও আমার কিছু যায় আসে না। ইরান এখন তাদের নিজের জগতে ফিরে যাচ্ছে। তারা জানে, যুক্তরাষ্ট্র কী করতে পারে।”

উল্লেখ্য, পরমাণু বোমা তৈরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে ইরান—এমন অভিযোগ তুলে গত ১৩ জুন রাজধানী তেহরান ও অন্যান্য এলাকায় বিমান অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। এই অভিযানের জবাবে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা শুরু করে ইরানও।

ইরান-ইসরায়েলের এ সংঘাত শুরুর ১০ দিন পর ২২ জুন মধ্যরাতে ইসরায়েলের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায় মার্কিন বিমান বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সামরিক কমান্ড এ অভিযানের নাম দিয়েছিল ‘দ্য মিডনাইট হ্যামার’।

এই অপারেশন পরিচালনার একদিন পরই ইরান-ইসরায়েলে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি জোর দিয়ে বলেন, কোনভাবেই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি পুনরায় শুরু করতে দেবেন না। কিন্তু, এখন পর্যন্ত ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির বিষয়ে অনড় বলেই মনে হচ্ছে। এরইমধ্যে জাতিসংঘের পরমাণুবিষয়ক নজরদারি সংস্থার ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির (আইএইএ) সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত বিষয়ক একটি বিল পাস করেছে ইরানের পার্লামেন্ট। এছাড়া, যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি জ্ঞাপন করে এখন পর্যন্ত কোনও বক্তব্যও আসেনি দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনির দিক থেকে।

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন